My ClickBD
আধুনিক যন্ত্র ‘লাইবা রুটি মেকার’ বিশ্বের প্রথম কাঠ দিয়ে রুটি তৈরির যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন মাগুরার বুনাগাতি গ্রামের হুমায়ুন কবির। বিদ্যুৎবিহীন পরিবেশবান্ধব রুটি তৈরির যন্ত্রটির নাম ‘লাইবা রুটি মেকার’। দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ‘লাইবা রুটি মেকার’ (Laaiba Ruti Maker) যন্ত্রটিকে বিশ্বের একমাত্র স্বাস্থ্যকর ও পরিবেশবান্ধব রুটি তৈরির যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা এই রুটি মেকারটিকে যাদুকরি বলে উল্লেখ করে অবিলম্বে সকলের ব্যবহারের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছেন। রুটি মেকার কেন রুটি। বিশ্বের সকল দেশেরই খাদ্য তালিকায় যার সদর্প উপস্থিতি লক্ষণীয়। বাংলাদেশের খাদ্য তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রুটি। ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধির কারণে রুটি খাদ্যতালিকায় প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বড় জনগোষ্ঠীর প্রিয় খাবার রুটি। আবার অনেকের ক্ষেত্রে রুটি পথ্য হিসেবে খাবারের রুটিন মেনু হয়ে গেছে। Rutimaker হাতে রুটি বানানো বেশ কষ্টসাধ্য। অনেক পরিবারে কেবল রুটি বানানোর জন্যই কাজের লোক রাখতে হয়। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের ব্যস্ততা। তাই রুটি তৈরীর কষ্ট লাঘব করার জন্য নানা সময়ে দেশে-বিদেশে আবিষ্কারের চেষ্টা করা হয়েছে ছোট বড় মেশিন। রুটি বানানোর গতানুগতিক প্রক্রিয়াকে সহজ করার জন্য গবেষণা করতে থাকেন হুমায়ুন কবির। একসময় সফলতা পায় তার গবেষণা। রুটি মেকার উদ্ভাবন করে ২০১৩ সালের প্রথম দিকে আলোচনায় আসেন মাগুরা জেলার এই উদ্ভাবক। পরিবেশ অধিদফতরের সম্মাননা পরিবেশবান্ধব যন্ত্র হিসেবে ইতিমধ্যেই ‘লাইবা রুটি মেকার’ পেয়েছে পরিবেশ অধিদফতরের সম্মাননা। আদি ও অকৃত্রিম খুব সহজেই এই যন্ত্র দিয়ে মিনিটে ১২ থেকে ১৫টি রুটি তৈরি করতে পারবেন। এতে প্রতিটি রুটি তৈরি হবে সেকেন্ডেই। রুটি তৈরি হবে কাগজের মতো পাতলা এবং আকারে বড় বা যেমন খুশি। এতে যেকোনো শেপের আটাই দেয়া হোক না কেন রুটি হবে গোলাকার। স্বাদ এবং পুষ্টিগুণের কোনরুপ পরিবর্তন ছাড়াই তৈরি হবে আদি ও অকৃত্রিম রুটি। Rutimaker সীমানা ছাড়িয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে দেশ-বিদেশে হুমায়ুন ও তার উদ্ভাবন পেয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। ইতিমধ্যেই অনলাইনে বিক্রয়ের মাধ্যমে পৌঁছে গেছে বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশে। আর এ রুটি তৈরির কাঠযন্ত্রের বিপণনের জন্য নিজেই উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন। যাদুকরী সুবিধা দেশীয় এ রুটি মেকারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, রুটি তৈরি সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকলেও মেশিনটি দিয়ে রুটি তৈরি করা সম্ভব। শুধু এর হাতল চেপে ধরলেই আটার গোলা রুটিতে পরিণত হয়। এটা চালাতে বিদ্যুতের কোনো প্রয়োজন হয় না। অল্প জায়গায় সুবিধামত ভাবে বসিয়ে ব্যবহার করা যায় এবং যে কেউ অনায়াসে এই রুটি তৈরির যন্ত্র চালাতে পারে। বহু উপকরণে ব্যবহারযোগ্যতা এ যন্ত্র দিয়ে গমের সেদ্ধ আটার রুটি, গমের কাঁচা আটার রুটি, সেদ্ধ চালের গুঁড়ার রুটি, তালের রুটি, কালিজিরা রুটি, মাসকলাইয়ের রুটি, মিষ্টি আলুর রুটি, দিল্লিকা রুটি, বেসন রুটি, ভেজিটেবল টোস্ট রুটি, মাসরুম রুটি, ইন্ডিয়ান বাটার রুটি, খামিরি রুটি, মিছি রুটি, পালক পরোটা, পনির পরোটা, মাঠার পরোটা, মেথি পরোটা, গোবি পরোটা, ইন্ডিয়ান লাচ্চা পরোটা, এগ রোল পরোটা, কিমা পরোটা, ক্যাপসিকাম চিজ পরোটা, ক্যাবেজ পরোটা, পিসপরোটা, লুচি ও ফুচকা প্রভৃতি তৈরি করা যায়। এক মিনিটের মধ্যে প্রায় ১৫ থেকে ২০টি রুটি তৈরি করা যায়। Rutimaker বিশেষ সুবিধা ১. সিদ্ধ ও কাঁচা আটার রুটি খুব ভালো হয়। ২. সিদ্ধ চালের গুঁড়ার রুটিও খুব ভালো হয়। ৩. দেশি ও বিদেশি রেসিপি অনুসারে বিভিন্ন ধরনের রুটি তৈরি করা যায়। ৪. আমাদের অভ্যস্ত স্বাদের রুটি তৈরি করা যায়। ৫. মেশিনের গ্যারান্টি অনেক বছর। ৬. ১৫-২০ দিন পর পর রুটি-পেপারটি পরিবর্তন করতে হয় বলে এটি অনেক বছর নতুন থাকবে। ৭. যেকোনো আকারের আটার গোল্লাকে সম্পূর্ণ গোলাকার বানিয়ে দেয়। সীমাবদ্ধতা এটি বিদ্যুৎবিহীন রুটি মেকার তাই রুটি ভেজে দেয় না। স্বীকৃতির অপেক্ষা যন্ত্রটির উদ্ভাবনের প্যাটেন্ট রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করা হয়েছে, যা প্যাটেন্ট কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতির অপেক্ষায় রয়েছে। অনলাইনে লাইবা রুটি মেকার বিশ্বের সবার হাতের নাগালে এই উদ্ভাবনকে পৌঁছে দিতে এর রয়েছে www.rutimaker.com নামে একটি ওয়েবসাইট। ফেইসবুকে রয়েছে অফিসিয়াল পেজ https://www.facebook.com/laaibahrutimaker. গুগলে সার্চ দিয়ে অনেকে লাইবা রুটি মেকারের রুটি তৈরির পদ্ধতি দেখতে পারবেন। ইউটিউবে পাওয়া যাচ্ছে হুমায়ুনকন্যা ছোট্ট লাইবার রুটি বানানোর ভিডিও ফুটেজ। Rutimaker বিপণন ও তথ্যকেন্দ্র দেশ-বিদেশে যন্ত্র সরবরাহ ও যোগাযোগ সহজ করার জন্য ঢাকায় রয়েছে অফিস। ৬৭ আগারগাঁও (সিদ্দিক টাওয়ারের তৃতীয় তলা), শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকায় রয়েছে লাইবা রুটি মেকারের বিপণন ও তথ্যকেন্দ্র। ফোন: 01799600010-17, 01731494501 ও 01740861911। উদ্ভাবকের স্বপ্ন হুমায়ুন কবির তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকারি সহায়তা না হোক, অন্তত একটু ঋণসুবিধা চান। যা পেলে বদলে যাবে রুটি তৈরির গল্প। তিনি বলেন, ‘একজন উদ্ভাবক হিসেবে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।’ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা পেলে তার এ উদ্ভাবন সারাবিশ্বে দেশের নাম- মাগুরার নাম উজ্জ্বল করবে। |