My ClickBD
আমার নাম হুমায়ুন কবীর, বাড়ি মাগুরা জেলার শালিখা থানার বুনাগাতি গ্রামে। ২০১১ সালে আমি উদ্ভাবন করি রুটি বানানোর কাঠের যন্ত্র এবং নাম দিয়েছিলাম লাইবা রুটি মেকার (Laaibah Ruti Maker)। এরপর গত পাঁচ বছরে অনেক গবেষণা চালিয়েছি। বাজারে পণ্য ছাড়ার পর গত কয়েক বছরে অনেক নকলবাজ আমার পণ্যটি নকলের চেষ্টা করছেন। তবে নকলবাজদের কেউই সফল হননি, বরং তারা সফল হয়েছেন ক্রেতাদের ঠকিয়ে। কারণ তারা এই কাঠের যন্ত্রকে আসবাবের মতোই সাধারণ কিছু ভেবেছেন, আর লাইবা রুটি মেকার তৈরিতে যে ধরনের পদ্ধতি ও উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে তাও নকলবাজরা গ্রহণ করেননি। তারা ভুল পদ্ধতিতে যন্ত্রটি তৈরি করে বিক্রি করছেন। এতে অসচেতন ক্রেতারা ঠকছেন। এবং ভোগান্তির শিকার অধিকাংশ ক্রেতা এসে লাইবা রুটি মেকারের অফিসে অভিযোগ করছেন, তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, লাইবা রুটি মেকার ভেবে তাঁরা পণ্যটি কিনেছিলেন, কিন্তু নকল পণ্যটিতে রুটি হয় না। নকলবাজরা যেসব ভূল করছে : লাইবা রুটি মেকার দেখে মনে হয় যে কেউ এটি বানাতে পারবেন, আসলে তা মোটেও ঠিক নয়। এটি অত্যান্ত সুক্ষ জিনিস, এটি যারাই নকলের চেষ্টা করেছেন তারাই ভুল করেছেন। ঠিক পরিমাপ ও পদ্ধতি না জেনে যন্ত্রটি তৈরি করছেন। আর তারাভালো মানের কাঠ ব্যবহার করছেন না এবং সিজিনিংয়ের সঠিক প্রক্রিয়াও গ্রহণ করছেন না। এতে অল্পদিনে কাঠ বেঁকে গিয়ে যন্ত্রটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। কাঠতো ৩০০ টাকা সি.এফ.টিতেও পাওয়া যায় আবার ২৩০০ টাকা সি.এফ.টিতেও পাওয়া যায় । গত পাচ বছর আগে আবিষ্কারের শুরুতে আমি প্রায় ২৩ ধরনের কাঠকে নিয়ে Research করেছি, কিন্তু মেহগনি কাঠের প্লেট ও বাবলা কাঠের হ্যান্ডেল ছাড়া রুটি মেকার তৈরি করা যায় না এই তথ্যট অনেকেই জানেননা। এছাড়া সব থেকে ইমপর্টেন্ট হচ্ছে সুক্ষ পরিমাপ। যেটা আমি আমার গবেষণার এক পর্যায়ে যন্ত্রের সব অংশের একটি নির্দিষ্ট ও সুক্ষ পরিমাপ বের করেছি, যেমন–যন্ত্রটির হ্যান্ডেলের নাট লাগানোর যে স্ট্যান্ডটি রয়েছে তার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা কত সেন্টিমিটার হলে সঠিক হবে; নিচ থেকে কত উচ্চতায় নাট ছিদ্র করতে হবে; হ্যান্ডেলটি কত সেন্টিমিটার লম্বা হলে যন্ত্রে রুটি বানাতে চাপ কম লাগবে এবং যন্ত্রের উপরের প্লেটটির সংলগ্ন যে বিস্কিটটি (বিশেষ অংশ) থাকে তার সঠিক উচ্চতা কত হবে – তা সেসব গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপ না জেনে কেউ লাইবা রুটি মেকারের যন্ত্র বানাতে চেষ্টা করলে মেশিনটি দেখেতে হুবহু একই রকরমের হবে কিন্তু রুটি ঠিকমত হবেনা, হতেই পারে না, অসম্ভব । এরকম আন্দাজে কাঠমিস্ত্রির দ্বারা রুটিমেকার তৈরি করলে রুটি হবে মোটা মোটা এবং একপাশে চিকন ও অন্যদিকে পতলা, রুটি বানাতে চাপ লাগবে অনেক বেশী, এবং রুটি অবশ্যই বড় হবে না। এছাড়া প্রতিটি অংশ সংযোগের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় আছে, যা প্রশিক্ষণ গ্রহণ না করলে বোঝা সম্ভব নয়। কারন আমি ০৫ বছর ধরে যে কারিগরদের ট্রেনিং দিয়েছি তারা এখনও প্রতি ১০০ টি মেশিন তৈরি করলে আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ টি মেশিন রিজেক্ট করে। এই রিজেক্ট মেশিন আমরা বিক্রি করি না। তাহলে ব্যাপারটা কি দাড়াচ্ছে ? আমার দ্বারা ০৫ বছর ধরে ট্রেনিংপ্রাপ্ত কারিগররাই যেখানে রুটিমেকার বানাতে গেলে ২০% থেকে ২৫% রিজেক্ট করে ফেলে সেখানে নতুন একজন কাঠমিস্ত্রী কিভাবে সঠিক রুটি মেকার বানাবে (হতে পারে সে ফার্নিচারের উপর তার ২০ বছরের অভিগ্গতা আছে কিন্তু রুটি মেকারের উপর সে অবশ্যই নতুন, তাই না)? উপরের যে ড্রইংগুলো দেখতে পাচ্ছেন এগুলোর প্রতিটির যে সুক্ষ পরিমাপ আমি পাচ বছর সাধনা করে বের করেছি তাতো কোন নতুন লোকই জানেন না। এ ছাড়া নকলবাজরা কোনো নীতি-নৈতিকতার ধার ধারে না। তারা যন্ত্রের ভিতরের প্লেটে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুকিঁপূর্ণ রং, গালা, কারফা, রজন ইত্যাদি উপকরণের উপর বেশী করে তেল দিয়ে রুটি বানাতে বলে যেটা আসলে আমার আবিষ্কৃত টেকনোলজিই না। কেউ কেউ আবার মোটা পিভিসি ও রেক্সিন ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করছেন। এতে ক্রেতাদের চরম ক্ষতি হচ্ছে। কাঠের তৈরী নকল রুটি মেকার (Nakal Ruti Maker) কিনে ক্রেতারা ঠকছেন যেভাবে: অধিকাংশ অসচেতন ক্রেতা যন্ত্রের ডিজাইন, ফিনিশিং, রং ইত্যাদির ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। কিন্তু তারা কখনই যন্ত্রটির সঠিক পরিমাপ, অতি অল্প চাপে রুটি হওয়া বা চারিকে সমানভাবে পাতলা হওয়া কিংবা স্থায়ীত্ব ইত্যদি বিষয় সম্পর্কে অগ্গ থাকেন। আর সেই অগ্গতার সুয়োগ নেয় নকলবাজরা। আর যন্ত্রের সঙ্গে কি কি এক্সেসরিজ না থাকলে যন্ত্রটি অসম্পূর্ণ থাকে, তাও ক্রেতারা জানেননা। এমনকি কিছু নকলবাজরাও এটা জানেননা, কারন নকলবাজরেকেও নকল করছে নতুন নকলবাজরা। লাইবা রুটি মেকারের সঙ্গে যে ৩০০ বর্গফুটের ফুড কন্টেইন্ড পেপার দেওয়া হয় তা মূলত যন্ত্রের একটি অপরিহার্য্য একটি অংশ। এই পেপার দেওয়া হয় স্বাস্থ্যগত বিষয়ের কথা চিন্তা করেও। লাইবা রুটি মেকোরের কার্টুনের মধ্যে আরও যেসব উপকরণ দেওয়া হয় যেমন : সিডি, ম্যান্যুয়াল বই, টেপ ইত্যদি তা মূলত ক্রেতাদের ব্যবহারের জন্য খুবিই প্রয়োজনীয়। কিন্তু নকলবাজরা এগুলোর কোনো কিছুই ঠিকমত দেয় না। যারা নকল মাল বিক্রি করছে তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ্যড দিচ্ছে এবং তাদের মালের দামও কম। এখন কথা হল ইন্টারনেটে সঠিক পরিমাপের ও বেঠিক পরিমাপের দুইটি মালের ছবি দেখতে হুবহ একই রকম, এক্ষেত্রে সাধারন ভোক্তাগণের সঠিক পরিমাপের রুটিমেকারটি খুজে নিবে কিভাবে? এটা রীতিমত খুবই কষ্টসাধ্য এবং অসম্ভব ব্যাপার। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বোঝার উপায় নেই কে আপনাকে ৩০০ স্কয়ারফিটের জাপানি ফুডকন্টেন্ট পেপার দিচ্ছে আর কে ঠকিয়ে সাধারন পলিথিন দিচ্ছে। এমনকি ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনি এটাও বুঝতে পারবেন না যে কোন মেশিনে রুটি সঠিক ও পাতলা হয় বা চাপ কম লাগে। বাংলাদেশের শত শত যায়গায় প্রতি মাসেই প্রায় ৫০০০ পিস কাঠের তৈরী নকল রুটি মেকার তৈরি হচ্ছে, তারমধ্যে অরজিনাল লাইবা রুটি মেকার (Laaibah Ruti Maker) তৈরি হচ্ছে মাত্র সবোর্চ্চ ২০০ টি। এই সব নকলবাজদের অনেকে আবার লাইবা ব্রান্ডের নামেই রুটি মেকার বিক্রি করছে এবং মানুষকে বোকা বানাচ্ছে ও লাইবার সুনাম নষ্ঠ করছে। নকল কাঠের রুটি মেকারে রুটি চিকন মোটা হবার আরও একটি ভয়াবহ কারন: প্রতেক কাঠের নিজস্ব একটি ভাষা আছে, সেটা হল আজকে আপনি যদি এই মুহুতেই ১টি মেশিন বানালেন যার Water Level ১০০% ঠিক আছে, অথা… এই মুহুতে রুটির পুরুত্ব ঠিকমত হচ্ছে, কিন্তু ২/৩ মাস পরে দেখা গেল রুটির পুরুত্ব ঠিকমত হচ্ছে না, রুটি এক কোনায় চিকন ও আর এক কোনায় মোটা হচ্ছে, অথবা মাঝখানে মোটা হচ্ছে এবং পাশে চিকন হচ্ছে, এর কারন হল মেশিনের কাঠের মশ্চয়ার লেভেল বাংলাদেশের আবহাওয়ার সাথে ১১% থেকে ১৩% Adjust করা নেই। এটা করতে হলে মেশিন তৈরি করার পরেও কমপক্ষে ৪/৫ মাস মেশিনটিকে কাষ্টমারের কাছে বিক্রি না করে রেখে দিতে হয় এবং এরপরে এর ১০০% Water Level করে কয়েক স্তরের QC করতে হয় যা আমার নকলবাজ বন্ধুরা জানেন না। এভাবে মেশিন তৈরি করলে মেশিনের দাম একটু বেশী হবে কিন্তু কাষ্টমারকে ঠকানো হবে না। আর এভাবে মেশিন তৈরি করলে মেশিনটা অনেক বছর টিকে যাবে। পক্ষান্তরে, আমার নকলবাজ বন্ধুরা সিজনিং ছাড়া ১১% থেকে ১৩% মশ্চয়ার লেভেল Adjust করা ছাড়াই নতুন কাঠেই রুটিমেকার তৈরি করে কাষ্টমারদের সাথে জালিয়াতি করছেন। লাইবা রুটি মেকারের (Rutee Maker) বিশেষত্ব: রুটি ও রুটি জাতীয় বিভিন্ন খাদ্য লাইবা রুটি মেকার দিয়ে বানানো যায়। যেমন- কাঁচা আটার রুটি, সিদ্ধ আটার রুটি, চালের রুটি, সিঙ্গারা, লুচি ইত্যাদি সহ দেশি-বিদেশি অনেক রুটি এ যন্ত্রে বানানো যায়। যন্ত্রটি সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি। পিড়া-বেলুনে তৈরি রুটির মতো স্বাদ অক্ষুণ্ন থাকে। স্বল্প সময়ে রুটি তৈরি করা যায়। এত সহজ যে শিশুরাও এটি দিয়ে রুটি বানাতে পারবে। বিদেশি ইলেকট্রিক রুটি মেকার নিয়ে ব্যবহারকারীদের সিদ্ধ আটার রুটি হয় না, চালের গুড়ার রুটি হয় না , রুটি পোড়া পোড়া হয়ে যায়, রুটি চামরার মত শক্ত থাকে, এই ধরণের অভিযোগ থাকলেও আমাদের পণ্য নিয়ে কোন অভিযোগ নেই। লাইবা রুটি মেকার চেনার উপায় (Laaibah Ruti Maker): লাইবা রুটি মেকার (Laaibah Ruti Maker) আন্তর্জাতিক মানের মোড়কজাত করে বিপণন করা হয়। মোড়কের গায়ে কোম্পানির বারকোড সহ মাগুরার বুনাগাতির ফ্যাক্টরি ও ঢাকার পশ্চিম আগারগাঁওয়ে (৬৭ নম্বর) সিদ্দিক টাওয়ারের চতুথ তলায় অফিসের ঠিকানা উল্লেখ থাকে। একটি কার্টুনের মধ্যে জাপানি ফুড কন্টেন্ট পেপার, সিডি, ম্যানুয়াল ও টেপ থাকে। কাঠের যন্ত্রের গায়ে লাইবা রুটি মেকার ফ্যাক্টরির লোগো সহ অ্যালুমিনিয়ামের স্টিকার লাগানো থাকে। লাইবা রুটি মেকারে অতি অল্প চাপে ৮ ইঞ্চি থেকে সাড়ে ৮ ইঞ্চি রুটি হয়। রুটির চতুর্দিকের পুরুত্ব সমান হয় কাগজের মত পাতলা হয়। তবে নকল যন্ত্রে রুটি একদিকে পাতলা আরেক দিকে মোটা হয়। অসচেতন ক্রেতা নকল যন্ত্র কিনে ব্যবহার করতে না পেরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পরে তারা লাইবা রুটি মেকারের অফিসে যোগাযোগ করে অভিযোগ করে থাকেন, কিন্তু তখন আর কিছু করার থাকে না। ক্রেতারা যেন নকল পণ্য না কেনেন সেজন্য লাইবা রুটি মেকারের পক্ষ থেকে সব সময়ই সতর্ক করা হচ্ছে। লাইবা রুটি মেকারের ওয়েবসাইট http://www.rutimaker.com অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/laaibahrutimakerfactory/ ও Laaibah ruti maker factory নামে ইউটিউবের চ্যানেল থেকে ক্রেতাদের সতর্ক করা হয়ে থাকে (https://www.youtube.com/watch?v=_r6VP-6NtL8&t=6s) । ঢাকা বাণিজ্য মেলা : লাইবা রুটি মেকার ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় স্টল দিয়ে ব্যাপক সাড়া যায়। এবার বাণিজ্য মেলায় ৩৭ নম্বর স্টলটি আমাদের। আগ্রহীরা আমাদের স্টলটি ঘুরে যেতে পারেন। লাইবা রুটি মেকারের বাজার : ২০১১ সালে লাইবা রুটি মেকার উদ্ভাবিত হলেও ২০১৪ সালে পণ্যটি ভালোভাবে বাজারে ছাড়া হয়েছে। আমাদের পণ্য দেশে ও বিদেশে সমানভাবে সমাদৃত হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে আমাদের পণ্য নিয়মিত যাচ্ছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের কয়েকটি দেশ, অস্ট্রেলিয়াতে আমাদের পণ্য গেছে। নকলবাজদের প্রতিহত করুন : দেশবাসী ও সরকারের প্রতি আমার আহ্বান দেশের সৃজনশীল উদ্যোগের পাশে দাঁড়ান ও নকলবাজদের প্রতিহত করুণ। এটি না করলে দেশের অনেক সৃজনশীল উদ্যোগ হারিয়ে যাবে। অনেক সম্ভাবনা মুখ থুবড়ে পড়বে। অনেকেই সৃজনশীল কাজের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। দেশের সত্যিকার মঙ্গল চাইলে এখনই পদক্ষেপ নেন। -----OOO----- |